সক্ষমঃ প্রতিবন্ধীদের যত্নে পরিবর্তন
বাংলাদেশে ১৬৯.৮ মিলিয়ন মানুষের বাস। এদেশে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা যেসব বাধা-বিপত্তির সম্মুখীন হচ্ছে সে বিষয়ে জরুরি নজর দেয়া দরকার । দুর্ভাগ্যজনকভাবে, স্বাস্থ্য রেকর্ডে নিয়মিত ভাবে প্রতিবন্ধী তথ্য সংগ্রহ হয় না, তবে সাম্প্রতিক জরিপের তথ্য অনুসারে জনসংখ্যার ২.৮০% অন্তত একজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি আছে। এই শতকরা পরিমাণ লিঙ্গ, গ্রাম এবং শহর ভেদে ভিন্ন হয়।
পিডব্লিউডি এর তথ্যের উপর ভিত্তি করে এই শতাংশকে বাদ দিলে ৩ থেকে ৭ দশমিক জিডিপি ক্ষতি থেকে শুরু বড় ধরনের অর্থনৈতিক প্রভাব আছে।
এক নজরে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা
বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রয়োজনীয়তা বোঝার এবং সে অনুযায়ী তাদের অধিকার রক্ষার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ার চেষ্টা করছে । ২০০৭ সালে দেশে আন্তর্জাতিক মানব অধিকার কাঠামোর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার সংরক্ষন করতে একটি ইউনাইটেড নেশনস কনভেনশন (সিআরপিডি) সমর্থন করে। উল্লেখযোগ্যভাবে, ২০১৫ সালে বাস্তবায়িত জাতীয় সামাজিক সুরক্ষা কৌশল (এন. এস. এস. এস)-এ প্রতিবন্ধকতা সম্পর্কিত বিষয়গুলি বিশিষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
এনএসএসএস প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সহায়তা করার জন্য একটি ব্যাপক পদ্ধতির রূপরেখা তৈরি করে। এতে ১৮ বছর পর্যন্ত শিশুদের জন্য, ১৯-৫৯ বছর বয়সী বয়স্কদের জন্য, এবং তীব্র প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য ৬০ বছরের বয়স্ক ভাতা অনুমোদনের একটি পরিকল্পনা রয়েছে।
সক্ষমঃ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের যত্নশীল এবং অনুশীলনকারীদের জন্য জাতীয় জ্ঞান কেন্দ্র
নিকেতান ফাউন্ডেশন এবং ডি. আর. আর. এ-র সহযোগিতায় RedOrange সক্ষম প্রকল্পের নেতৃত্ব দিচ্ছে। এই উদ্যোগটি পিডব্লিউডি-দের সহায়তা ও যত্ন বাড়ানোর জন্য একটি জাতীয় জ্ঞান কেন্দ্র তৈরির দিকে মনোনিবেশ করছে। এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্যগুলি হলঃ
জ্ঞান সমৃদ্ধি: হাবটি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রতিবন্ধীদের সাথে কাজের ধারনাগুলো সংগ্রহ করে সরকারি এবং বেসরকারের সংস্থাগুলোর একযোগে কাজের সুযোগ তৈরি করবে।বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে একটি প্রভাবশালী এবং চলমান ডাটাবেস তৈরী করাই এর লক্ষ্য।
শেখার সরঞ্জাম তৈরি: ‘সক্ষম‘ বিভিন্ন শেখার সরঞ্জাম তৈরি করবে, যেমনঃ ভিডিও, অ্যানিমেশন, পকেট-বই, ইনফোগ্রাফিক, এবং নীতি সংক্ষেপ। এই সরঞ্জামগুলো কেবল সাফল্যের প্রমাণের জন্য না বরং সাফল্যের গল্পগুলি শেয়ার করতে এবং কাজের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলোর পরিচয় ঘটানো।
আইসিটি সেবা এবং যোগাযোগের উন্নতি: ‘রেডঅরেঞ্জ’ এর ‘সক্ষম‘ প্রকল্পটি আইসিটি সেবা, যেমনঃ ওয়েব এবং মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন তৈরি, সফটওয়্যার মেইনটেন্যান্স, এবং ব্র্যান্ডিং নিয়ে কাজ করছে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য কাজের অনুশীলনকারী, তাদের মাতা-পিতা, এবং শিক্ষকদের ব্যবহারের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করাই এর লক্ষ।
স্টেকহোল্ডার এঙ্গেজমেন্ট: প্রকল্পটি স্টেকহোল্ডার ম্যাপিং, অংশগ্রহণকারীদের অর্জন, এবং সম্পৃক্তির দিকে গুরুত্ত আরোপ করে। সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাক্টিভেশন এবং এসইও ্কৌশলের মাধ্যমে হাবটি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে কাজ করে যাচ্ছে।
এগিয়ে যাওয়ার পথ: সম্মিলিত সামাজিক সুরক্ষা
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কল্যাণে একটি সর্বজনীন সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ‘সক্ষম‘ তথ্যের ফাঁকগুলি পূরণ করে, সহযোগিতার ক্ষেত্র প্রচার করে এবং যত্নশীল এবং অনুশীলনকারীদের কাজের সুযোগ বৃদ্ধি করে। শেখার সরঞ্জাম সরবরাহ করে এবং একটি একক জ্ঞান কেন্দ্র তৈরী করে সক্ষম বাংলাদেশে পিডব্লিউডি-র অধিকার এবং কল্যাণের জন্য কাজ করা কমিউনিটিতে অবদান রাখে।
আজ, ৩ ডিসেম্বর, আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস উদযাপনের মধ্যে দিয়ে সক্ষম আন্তরিকভাবে আশা করছে যে বাংলাদেশের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য প্রযুক্তি ও সহযোগিতাঢ় ক্ষেত্র বাড়িয়ে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সহায়ক পরিবেশ তৈরি করবে।