ভাসমান বাল্যবিবাহ: বেদে মেয়েরা এখনও তাদের শৈশব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে
ঢাকার সাভার উপজেলার বংশী নদীর তীর বেদে সম্প্রদায়ের একটি বড় আবাসস্থল। দ্য ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অধিকাংশ বেদে মেয়ের ১৫ বছর বয়সের আগেই বিয়ে হয়ে যায় এবং ১৮ বছরের মধ্যে তারা দুই সন্তানের মা হয়।
তাদের কোনো জমি বা আয়ের স্থায়ী উৎস না থাকায় তারা আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল। ঐতিহ্যবাহী পেশা ধরে রেখে তারা সাপের খেলা দেখিয়ে আয় করে, ভেষজ ওষুধ বিক্রি করে অথবা ঐতিহ্যবাহী উৎসবে অংশগ্রহণ করে। কিন্তু দ্রুত নগরায়ণ ও কোভিড মহামারীর কারণে তাদের আয়বর্ধক কার্যক্রম সীমিত হয়ে যায়। তারা তাদের মৌলিক চাহিদা ও নাগরিক সুবিধা থেকেও বঞ্চিত। অর্থনৈতিকভাবে তারা ভেঙে পড়েছে এবং প্রতিদিন তিন বেলা খাবার খেতে তারা প্রায়শই ভিক্ষাবৃত্তির দিকে ঝুঁকে পড়ছে। এমনকি তারা তাদের মেয়েদেরকে শিক্ষিত করার চেয়ে তাদের বিয়ে দিয়ে দেওয়া বেশি যুক্তিসঙ্গত মনে করে।
২০২০ সালে ৬০ জন বেদে উত্তরদাতাদের উপর পরিচালিত মাঠ জরিপ অনুসারে, তাদের মধ্যে ৪১.৬৬% বেদে ভাল ঘর তৈরি করতে পারে না; যেখানে ৪৬.৬৭% তাদের সন্তানদের শিক্ষার খরচ বহন করতে পারে না, ৫৩.৩৩% উন্নত চিকিৎসার সুবিধা বহন করতে পারে না, এবং ৪০% পুষ্টিকর খাবার কিনতে পারে না। আবার ৩০% বেদে তাদের সম্প্রদায়ের অর্থবান ব্যক্তি এবং বেসরকারী সংস্থার কাছ থেকে ঋণ নেয়। উপরে উল্লিখিত তথ্য তাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থা নির্দেশ করে।
এই সুপ্রাচীন ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত। প্রশাসন ও সরকারকে তাদের অবস্থা উন্নত করতে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী এবং অন্যান্য সামাজিক সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও বেদে সম্প্রদায় যে এত দুর্দশায় রয়েছে তা অগ্রহণযোগ্য। উপরন্তু, এই প্রান্তিক জনগোষ্ঠীতে বাল্যবিবাহের ক্রমবর্ধমান সংখ্যার জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে অবশ্যই জরুরী পদক্ষেপ নিতে হবে।
সূত্র:
- https://www.thedailystar.net/opinion/editorial/news/bede-girls-being-robbed-their-childhood-3233361
- Ayesha Siddequa Daize, M. L. (2021). Traditional Profession and Livelihood Strategies Of Bede Community in Bangladesh: A Sociological Study. Bangladesh Journal online , 24.
Photo Credit: Md. Abdus Salam
Photo Source: The Third Pole