‘ডাচ জার্নাল ফর জেন্ডার স্টাডিজ’–এ এইচআইভি/এইডস বিষয়ে গবেষণা ও সৃজনশীল কাজ উপস্থাপনের অপূর্ব সুযোগ!
‘ডাচ জার্নাল ফর জেন্ডার স্টাডিজ’ বর্তমানে জেন্ডার ও সেক্সুয়ালিটি স্টাডিজ বিষয়ের গবেষকদের ও সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে গবেষণা ও সৃজনশীল কর্ম আহ্বান করছে। এবারের বিশেষ সংখ্যাটির মূল বিষয় হলো “সাহিত্য-সংস্কৃতিতে এইচআইভি/এইডস: প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনের না-বলা অভিজ্ঞতা ও বৈষম্যের খুঁজে”। এই বিষয়টি বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে অনেক আবেগীয়, রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক গুরুত্ব বহন করে। জার্নালটি মূলত সাহিত্য ও মিডিয়ায় এইচআইভি এবং এইডসের যে বহুস্তরের গল্পগুলো রয়েছে, সেগুলো তুলে ধরার জন্য প্রচেষ্টা করছে ।
উন্নয়নশীল দেশের মানুষের কাছে এটি শুধুই অ্যাকাডেমিক প্রবন্ধ লেখার আহ্বান নয়। এটি জীবনের সেই সব না-বলা গল্প তুলে ধরবে, যা কোথাও গুরুত্ব পায় নি বা প্রকাশ হয় নি। বৈশ্বিকভাবে এইচআইভি এবং এইডস বহু প্রজন্মকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করেছে। দুঃখজনক হলেও সত্য, এই সংক্রান্ত বেশিরভাগ গল্পই এসেছে পশ্চিমা বিশ্ব থেকে। আর এই একচেটিয়া অগ্রাধিকার পাওয়ার ফলে বড় একটি শূন্যতা তৈরি হয়েছে। এই শূন্যতার কারণে যেসকল জনগোষ্ঠী সীমিত সম্পদ, যত্নের ক্ষেত্রে বৈষম্য এবং তীব্র সামাজিক অপবাদের মধ্য দিয়ে মহামারির মতো সময় পার করেছেন তাঁরা গুরুত্ব পায় নি বা তাঁদের কথাগুলো প্রকাশ পায় নি। আর এই কারণেই বাদ পড়েছেন নারী, অভিবাসী, ইউরো-আমেরিকান পরিধির বাইরের কুইয়ার মানুষ (Queer People), যৌনকর্মী এবং যারা একই সাথে একাধিক স্তরের সামাজিক ও প্রান্তিকতার সঙ্গে লড়াই করতে বাধ্য হন ।
জার্নালটির সার্কুলারে বলা হয়েছে, তারা এই বিশেষ সংখ্যাটির জন্য এইচআইভি/এইডস বিষয়ক গবেষণার পরিধিকে সম্প্রসারিত করতে চাইছে। তাদের লক্ষ্য হলো, এমন কিছু নতুন গবেষণাপত্রকে একত্রিত করা, যা বহুস্তরের (intersectional) দৃষ্টিকোণ থেকে এইচআইভি/এইডস-এর সঙ্গে বেঁচে থাকার অভিজ্ঞতা, প্রান্তিকতাকে তুলে ধরে এবং যে গল্পগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের বাইরে অন্যান্য দেশের প্রেক্ষাপটে উপস্থাপন করা হবে।
এইচআইভি/এইডসের বেশিরভাগ গল্প বা গবেষণা হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র না হয় যুক্তরাজ্য থেকে এসেছে। এর ফলে বাংলাদেশ বা এর মতো অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মানুষের অভিজ্ঞতাগুলো মূলধারার আলোচনায় জায়গা পায়নি। সেই কারণে যেসব গল্প অপ্রকাশিত বা অনুচ্চারিত রয়ে গেছে, তারা চায় সেগুলোকে দৃশ্যমান করতে। এর মধ্যে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে (তবে শুধু এগুলোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়): সাহিত্য, চলচ্চিত্র, (অনলাইন) গেমস, ভিডিও প্রবন্ধ, মিউজিয়াম প্রদর্শনী, নৃত্য বা থিয়েটার পারফরম্যান্স, পারফরম্যান্স আর্ট, ভিজ্যুয়াল আর্টস এবং আর্ট ইনস্টলেশন।

সুযোগটি মূলত দুই ধরনের সাবমিশনকে স্বাগত জানাচ্ছে: প্রবন্ধ (Articles) এবং নিবন্ধ (Essays) । জমা দেওয়া কাজগুলো হতে পারে স্কলারলি (গবেষণামূলক) অথবা সৃজনশীল। এগুলো তত্ত্বীয় (theoretical), ব্যাখ্যামূলক (commentary), অভিজ্ঞতানির্ভর (empirical), কাব্যিক (poetic) অথবা শৈল্পিক (artistic) যে কোনো ধরনেই লেখা যেতে পারে। সকল পদ্ধতি বা মেথডলজি এখানে গ্রহণযোগ্য। অ্যাবস্ট্র্যাক্ট এবং মূল ম্যানুস্ক্রিপ্টস উভয়ই ইংরেজি অথবা ডাচ ভাষায় লেখা যাবে ।
তবে একটি বিষয় মনে রাখবেন, অ্যাবস্ট্র্যাক্ট প্রাথমিকভাবে গৃহীত হলেও প্রকাশনা নিশ্চিত হবে না। কারণ মূল ম্যানুস্ক্রিপ্টসগুলো ডাবল-ব্লাইন্ডেড রিভিউ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাবে। সকল গৃহীত অবদানই সম্পূর্ণ ওপেন অ্যাকসেসে প্রকাশিত হবে ।
শব্দসীমা ও জমা দেওয়ার নিয়ম:
| জমা দেওয়ার ধরন | শব্দসীমা (গ্রন্থপঞ্জিসহ) | অ্যাবস্ট্র্যাক্ট শব্দসীমা |
| পুর্ণাঙ্গ প্রবন্ধ (Articles) | ৬৫০০ শব্দ | ৫০০ শব্দ |
| নিবন্ধ (Essays) | ৩০০০ – ৩৫০০ শব্দ | ২০০ শব্দ |
গুরুত্বপূর্ণ তারিখসমূহ:
| প্রক্রিয়া | সময়সীমা |
| অ্যাবস্ট্র্যাক্ট জমার শেষ তারিখ | ২১ নভেম্বর ২০২৫ |
| জমাকৃত গবেষণা বাছাই ও সিদ্ধান্ত | ২৮ নভেম্বর ২০২৫ |
| প্রথম ভার্সন ম্যানুস্ক্রিপ্টস জমার শেষ দিন | ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৬ |
| প্রথম রিভিউ জমা | ১৫ মার্চ ২০২৬ |
| পরিমার্জন ও দ্বিতীয় ভার্সন জমা | ১৫ এপ্রিল ২০২৬ |
| প্রকাশনার চূড়ান্ত সময়কাল | সেপ্টেম্বর ২০২৬ |
অ্যাবস্ট্র্যাক্ট জমা ও যোগাযোগ
আবেদনকারীদের তাদের অ্যাবস্ট্র্যাক্ট প্রস্তাবনা একটি Word ফাইল হিসাবে নিম্নলিখিত গেস্ট সম্পাদকদের কাছে ইমেইল করতে হবে:
- Jesse van Amelsvoort: jdvanamelsvoort@uva.nl
- Looi van Kessel: l.van.kessel@hum.leidenuniv.nl
- Tijdschrift voor Genderstudies জার্নালটি আমস্টারডাম ইউনিভার্সিটি প্রেস (Amsterdam University Press) থেকে প্রকাশিত হয়।
প্রকাশনার বিভিন্ন ফরম্যাট সম্পর্কিত নির্দেশিকা ও প্রয়োজনীয়তা জানতে সম্পূর্ণ লেখক নির্দেশিকা (Full Author guidelines) দেখতে পারেন এখানে : https://www.aup-online.com/upload/IfA/TVGEND_IfA_2023.pdf
শেয়ার-নেট বাংলাদেশ গবেষকদের প্রতি এই দারুণ সুযোগটি কাজে লাগানোর জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছে। কারণ জ্ঞানের আদান-প্রদান শুধু গবেষণা তৈরির মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। বরং এর উদ্দেশ্য হলো সেই সব অভিজ্ঞতা ও বাস্তবতাকে সামনে আনা, যা মূলধারার আলোচনায় সহজে স্থান পায় না। ইউরোপ-আমেরিকার বড় জার্নালগুলো যখন আমাদের অঞ্চলের (যেমন বাংলাদেশের) গল্পগুলো শুনতে চায়, তখন সামগ্রিকভাবে একটি দারুণ সুযোগ তৈরি করে। কারণ এর মাধ্যমে শুধু ক্ষমতাশালী দেশের নয়, বরং এতদিন চুপ থাকা বা ইতিহাসে হারিয়ে যাওয়া মানুষদের কণ্ঠস্বরগুলো নতুন করে সবার সামনে উঠে আসে এবং ইতিবাচক পরিবর্তনের শুভ সূচনা করে।
